কখন চিকিৎসা করাবেন না, সেটা জানতে হবে।
প্রজনন বিজ্ঞান এখনো সম্পূর্ণরূপে বোঝা যায় না। অনেক ক্ষেত্রেই এজন্য বিতর্ক আছে। বাজারে এর জন্য অনেক ঔষধ আছে তবে তাদের কার্যকারিতা ঠিকভাবে জানা নেই। তাছাড়া, এই ঔষধগুলোর বেশ দাম এবং কখনও কখনও গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও থাকতে পারে।
যাইহোক, কখনও কখনও দম্পতিরা কিছু সময়ের জন্য গর্ভাবস্থার জন্য চেষ্টা করার পরে হতাশ বোধ করেন। তাঁরা বেশ কিছু ঔষধের জন্য হাতড়ে বেড়ান, যা তাদের গর্ভবতী হওয়ার জন্য সাহায্য করতে পারে।
দুর্ভাগ্যবশত, এটা আমাদের শরীর। এটি কোন মেশিন নয়। সুতরাং, আপনি আপনার শরীরের ওপর জোর করতে পারেন না।
সুতরাং না বুঝেই ডিএইচইএ, ইনসিটল, ক্লোমিফিন, লেট্রোজোল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বা প্রজেস্টেরোনের মতো ওষুধ গ্রহণের কোন যৌক্তিকতা নেই, যতক্ষণ না সেগুলো গ্রহণ করার যথেষ্ট প্ৰয়োজনীয়তা রয়েছে।
সুতরাং, সাধারণভাবে, আমরা দম্পতিদের নিয়মিত ও ঘন ঘন (প্রতি সপ্তাহে 2 থেকে 3 বার যৌন সঙ্গম) চেষ্টা করার পরামর্শ দিই, "বন্ধ্যাত্বের চিকিত্সা" শুরু করার আগে।
তবে যদি পুরুষের ক্ষেত্রে, গোপনাঙ্গে সার্জারি হয়ে থাকে, সংক্রমণ যেমন মাম্প, টিউবারকুলোসিস, যৌনবাহিত সংক্রমণ (এসটিআই), যৌন সমস্যা, ডায়াবেটিস, ধূমপান; বা মহিলার ক্ষেত্রে, 35 বছরেরও বেশি বয়স, অনিয়মি়ত পিরিয়ড, পিরিয়ডের সময় ব্যথা, গর্ভাবস্থা / ডিম্বাশয় / ফালোপিয়ান টিউবের সার্জারি, পিসিওএস, এন্ডোমেট্রিয়সিস, ফাইব্রয়ড, পূর্ববর্তী গর্ভপাত ইত্যাদি হয়ে থাকে, তবে "বন্ধ্যত্বের চিকিত্সা" আগেই শুরু করা উচিত (চেষ্টা করার 6 মাস পর থেকে)।
কেন এক বছর?
100 জন দম্পতি নিয়মিত গর্ভধারণের জন্য চেষ্টা করছেন, এরকম হলে এক মাসের পর 15 জন গর্ভধারণ করতে পারেন। 6 মাসের শেষে, 60 জনের গর্ভধারণের সম্ভাবনা থাকে এবং এক বছরের পর, তা 80%।
এক বছর আগে কোন পরীক্ষা করবেন বা ঔষধ নেবেন?
দম্পতিরা বেশিরভাগই বন্ধ্যত্ব সম্পর্কে উদ্বিগ থাকেন। কিন্তু তাঁদের খুব জনই মনে করেন, গর্ভাবস্থায় মা এবং শিশুর ঠিক থাকা উচিত কিনা। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং একে "প্রি কনসেপশানাল কেয়ার" বলা হয়। তাই গর্ভাবস্থায় মা এবং শিশুর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্যগর্ভাবস্থার আগেই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
ডাক্তার কয়েকটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারেন, কিছু শারীরিক পরীক্ষা করতে পারেন এবং রক্ত পরীক্ষা করে ব্লাড গ্রুপ, থ্যালাসেমিয়া এবং রুবেলা ভাইরাসের মতো কিছু পরীক্ষার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাছাড়া আপনার গর্ভাবস্থার সুযোগ উন্নত করতে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার পরামর্শ ও দেওয়া হয়। কেবলমাত্র একমাত্র ঔষধ "ফলিক এসিড" আপনাকে নিতে হবে। রক্তে যথেষ্ট পরিমাণে ফলিক এসিড থাকলে শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ঠিকমত হবে। আপনাকে গর্ভাবস্থার অন্তত এক মাস আগে ফলিক এসিড শুরু করতে হবে।
এখন এই ছবি সম্পর্কে-
এই ভদ্রমহিলা 25 বছর বয়সী এবং স্বামীর বয়স 27 বছর। তারা শুধুমাত্র 9 মাসের জন্য গর্ভাবস্থার জন্য চেষ্টা করছিলেন। এই স্বল্প সময়ের মধ্যেই তাঁদের ডিএইচইএ, ক্লোমিফিন, প্রজেস্টেরোন এবং লেট্রজেলের মতো ওষুধ দেওয়া হয়। কিন্তু কিছুই কাজ করেনি। আসলে কোন ওষুধেরই প্রয়োজন ছিলনা।
2018 সালের সেপ্টেম্বরে তারা আমাদের সাথে দেখা করলে আমরা তাঁদের জিজ্ঞেস করলাম, "আপনারা কি খুব তাড়াহুড়ো তে আছেন যে এই কদিনের মধ্যেই প্রেগন্যান্সি চাই ই চাই" তাঁরা বললেন, "আমরা আরও কিছু মাসের জন্য স্বাভাবিকভাবেই চেষ্টা করতে চাই"। আমরা তাদের সিদ্ধান্তকে সম্মান করি, এবং সব ঔষধ বন্ধ করতে বলি। আমরা শুধুমাত্র পরামর্শ দিই-
1. ফলিক অ্যাসিড
2. নিয়মিত সহবাস করা
3. থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা এবং রুবেলা পরীক্ষা।
আজ তাঁরা হাসিখুশি মুখ নিয়ে সুখবর দিতে এসেছিলেন।